দ্বিতীয় পর্ব ।। PTO মানে Please turn over। এ কথা কে না জানে! আমি জেনেছিলাম ক্লাস ফাইভে ষান্মাসিক পরীক্ষার কয়েকদিন আগে। নতুন কিছু শিখলে সেটাকে প্রয়োগ করার জন্য উঠেপড়ে লাগতাম আমি। PTO এর ক্ষেত্রেও তাই হলো। পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষায় ইতিহাসের খাতায় গোটা চারেক পৃষ্ঠায় লেখার মতো আর কিছু জানা ছিল না আমার; যতটুকু জানি সবটুকু লেখা হয়ে গেছে। সময় আছে হাতে। কী আর করা, প্রতিটি পৃষ্ঠায় লিখলাম PTO। একদম শেষে লিখলাম নাসির উদ্দিন আহমেদ (এটা আমার বাবার দেওয়া নাম। এরপর বড়ো ভাই মুক্তিযোদ্ধা মেজবাহ উদ্দিন বাবুল আমার নামটার দ্বিতীয় সংস্কারে করে লিখলেন, এ কে এম নাসির উদ্দিন আহমেদ; এটা আমার সার্টিফিকেট নাম হয়ে গেল। নামের তৃতীয়বার সংস্কার আমি করলাম ‘নাসির আহমেদ কাবুল’, যখন বাংলাদেশ বেতারে তালিকাভুক্ত গীতিকার হলাম। লেখালিখির ক্ষেত্রে এই নামটিই আমি ব্যবহার করে আসছি। ) আমি মঠবাড়িয়ায় পাঠশালায় পড়তাম। সাধু স্যার এলেন ইতিহাসের খাতা নিয়ে। এসে বসেই আমাকে ডাকলেন। মনে মনে ভাবলাম হয়তো ফেল করেছি। পাস বা ফেলের গুরুত্ব নেই আমার কাছে। স্যারের কাছে গেলাম। জিজ্ঞেস করলেন PTO মানে কি? ততক্ষণে বিষয়টি বুঝতে পেরে চুপ হয়ে গেছি আমি। শ্রেণি বন্ধুরা আমার দিকে তাকিয়ে আছে, কিছুই বুঝতে পারছে না ওরা। এবার সাধু স্যার সবাইকে আমার খাতা দেখালে ওরা সবাই হাসাহাসি করছিল। এতটুকুতে শেষ নয়! সাধু স্যার আমাকে নীল ডাউন হতে বললেন। আমি থুতনি স্যারের টেবিলে ছুঁইয়ে হাঁটু ভাজ করে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে মনে মনে বললাম, বসুমতি তুমি দুই ভাগ হও, আমি তোমার ভিতরে প্রবেশ করি! সাধু স্যারের নামটা মনে নেই আমার।