বইমেলায় ‘নন্দিতার অন্য আকাশ’ উপন্যাস

  • লেখক : নাসির আহমেদ কাবুল
  • প্রকাশ করেছে জলছবি প্রকাশন
  • প্রচ্ছদ এঁকেছেন অনিন্দ্য হাসান

রবীন্দ্রনাথ ৬৩ বছর বয়সে ৩৪ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন নারী ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর প্রেমে পড়েছিলেন। ওকাম্পো তখন একজন সম্পূর্ণ নারী। রবীন্দ্রনাথ পার হয়েছেন প্রৌঢ়ত্বের সীমানা। ওকাম্পোর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের মিলন হয়নি হয়তো তিনি চাননি বলে। তবে তাঁর জীবন ও স্মৃতিতে স্থান দিয়েছিলেন ভিক্টোরিয়াকে। তার ‘বিজয়া’কে তিনি গানে-কবিতায় মূর্ত করে তুলেছিলেন বর্ণে-গন্ধে-ছন্দে।
পাবলো পিকাসো ৬৪ বছর বয়সে ফ্রাঁসোয়া জিলো নামের ২১ বছর বয়সী এক মেয়ের সঙ্গে দিব্যি সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। বিয়ে না করলেও দুটি সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন তারা। সন্তানদের স্বীকৃতিও দিয়েছিলেন পিকাসো। তিনি ৭০ বছর বয়সে আবার প্রেমে পড়েছিলেন জেনেভিয়েভ লাপোর্ত নামে ২৪ বছর বয়সী আরেক ফরাসি যুবতীর।
প্রেমে পড়ার জন্য বয়স কোনো ব্যাপার নয়—এমনই মনে করতেন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও খ্যাতিমান কথাশিল্পী গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস। তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘মেমোরিজ অব মাই মেলানকলি হোরস’-এর (আমার স্মৃতির বিষাদ গণিকারা) নায়ক নব্বই বছর বয়স পর্যন্ত অবিবাহিত জীবন কাটিয়ে হঠাৎ একটি কুমারী মেয়ের ভালোবাসা পেতে উদ্গ্রীব হয়ে উঠেছিলেন এবং সেই ভালোবাসার সন্ধান পেয়ে অতীতের প্রেমহীন জীবনের অসারতাকে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।
‘নন্দিতার অন্য আকাশ’ উপন্যাসও অনুরূপ অসম বয়সী দুই মানব-মানবীর প্রেমকাহিনী। উপন্যাসটির নায়িকা নন্দিতা বিবাহিতা কিন্তু ডিভোর্সি। নায়ক অরণ্যও বিবাহিত। হঠাৎ করে নন্দিতার বিয়ে ভেঙ্গে গেলে অরণ্যর সঙ্গে ভার্চুয়াল জগতে পরিচয় হয় নন্দিতার। তারপর প্রেম। তখনো তাদের দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি। প্রায় আট মাসের মাথায় তাদের প্রথম দেখা হয় ঢাকার চন্দ্রিমা উদ্যানে। নন্দিতা পরিচয়ের প্রথম থেকেই তার ভালোলাগার কথা জানায় এবং বিয়ে করার কথা বললে রাজী হয়নি অরণ্য। সে বলেছে, নন্দিতার বয়স তার বয়সের অর্ধেক। এই অসম বয়সী দুজনের দাম্পত্য জীবন সুখের হতে পারে না। অপরদিকে সে তার স্ত্রী অপর্ণাকেও ঠকাতে চায় না। নন্দিতাকে বিয়ে করতে না চাওয়ার অরণ্যের অনেকগুলো যুক্তির কাছে হার মানে নন্দিতা। তারপরও নন্দিতার দাবি—হয় অরণ্য তাকে বিয়ে করবে, নয়তো তার গর্ভে অরণ্যর সন্তান জন্ম দিতে হবে। প্রথম-প্রথম অরণ্য রাজি না হলেও একপর্যায়ে নন্দিতা তার গর্ভে অরণ্যর সন্তান ধারণ করে এবং একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেয় তারা। নন্দিতার গর্ভে অরণ্যর সন্তান আসার এক মাসের মধ্যে নন্দিতার বিয়ে হয়ে যায়। সে সংসারে নন্দিতার আর কোন সন্তান হয়নি। নন্দিতার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে অরণ্য এবং একপর্যায়ে বিদেশে চলে যায় সে। যাওয়ার আগে তার সমস্ত সম্পত্তি নন্দিতার নামে উইল করে রেখে যায়। নন্দিতা তার অপেক্ষা করে বছরের পর। কিন্তু সে বুঝতেই পারে না, অরণ্য বেঁচে আছে কী নেই। নন্দিতার ভাবনার আকাশে শুধু অরণ্যর অস্তিত্ব। প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে নন্দিতা তার আকাশে শুধু অরণ্যকেই খুঁজে ফেরে। এভাবে বছরের পর বছর অপেক্ষা করে আছে সে অরণ্যর জন্য।

বইটি পাওয়া যাবে বইমেলা ২০২০ জলছবি প্রকাশনের স্টলে

মন্তব্য করুন