কেটে গেল কয়েকটি বছর।। জয় মজুমদার

আমার খুব কাছের একজন মানুষের কাছ থেকে তোমার সেই অনাকাঙ্ক্ষিত চিঠিটি পেয়েছিলাম,
কিন্ত হঠাৎ এই অনাকাঙ্ক্ষিত চিঠি পেয়ে আমি অনেকটা হতভম্ব হয়ে পড়ি! মনে মনে আমিও ভাবতে লাগলাম, আমার জীবনে যদি এমন কাউকে পেতাম যে আমাকে ভালোবাসবে আমাকে প্রেমের চাদরে আগলে রাখবে।

কিন্তু ভাগ্যের যে পরিহাস সেটি তো আমার অনুকূলে নাই অবশেষে চিঠিটি পড়তে লাগলাম পড়া শেষে দেখলাম যে আমাকে কেউ একজন জীবন সঙ্গী হিসেবে চায় কিন্তু আমি তখনও দ্বিধায় পড়ে গিয়েছি আমি তো ভুল চিঠি পড়ছি নাতো?

কারন আমি চাইলেও যে আপন মানুষটাকে কাছে নিয়ে আসার ভাগ্য হয়ে ওঠে না- অবশেষে চিঠিটি আবার পড়ে নিশ্চিত হলাম যে আমাকে কেউ একজন তার জীবনসঙ্গী হিসেবে চায়। ঠিক তখনই চোখ দিয়ে অশ্রু নেমে আসলো হাউমাউ করে কান্না করতে শুরু করলাম, হয়তোবা সেটা ছিল আমার মনের পাগলামো। কারন, অনাকাঙ্ক্ষিত চাওয়া পাওয়াটাই যে কাঙ্ক্ষিত ফল স্বরুপ হয়ে ফিরে আসলো আমার জীবনে তাই।

আমিও পাল্টা-পাল্টি চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দিলাম –
আমিও তেমার জীবন সঙ্গীনি হয়ে ফিরে এসেছি এক নবরূপ হয়ে।

অবশেষে একদিন দেখা হয়েছিল। সেই দেখাতে দু’জন দু’জনের আরো বেশি আপন হয়ে গেলাম। ক্ষনিকের জন্য হলেও সময়টা বেশ ভালোই কেটেছে। বিদায় লগ্নে আবার নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হলাম। ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করছে না তবুও যে ছেড়ে যেতে হচ্ছে ।

বাসায় ফিরে কাছের সেই বন্ধুর নিকট ক্ষনিকের দেখার অনুভূতি গুলো প্রকাশ করলাম। বন্ধুও আমার কাছে তার অনুভূতিগুলো প্রকাশ করলো আসলে এটাই হয়তো আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ পাওয়া।

বান্ধবীর সেই আবেগ মাখা কথাগুলো শুনে অনেকটা আবেগ আপ্লত হয়ে পড়ি। কিন্ত কেন জানি আমার ভয় হচ্ছিল কারন আমার বাবা-মা কি মেনে নিবে ?

যে আমার জীবনে নতুন পৃথিবী হয়ে ফিরে এসেছে,
তার পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা এতটা ভালো না
অনেকটা অসচ্ছল বলা যেতে পারে। কিন্তু আমার মা বাবার তো চাওয়া পাওয়া বিশাল ছেলের বাড়ী গাড়ি সবই থাকতে হবে। আমি একটু টেনশনে পড়ে যাই চোখে অশ্রু নেমে আসলো নিমিষেই।

কিন্তু কিছুক্ষণ পর সেই প্রিয় মানুষের ফোন আসলো একটু কথা বলতে না বলতে বুঝে ফেললো আমার মন খারাপ কিন্তু কেন মন খারাপ করছো? সেই জবাব যে আমার কাছে নেই, আমি কি ভাবে যে বলবো আমার মা বাবার চাওয়া পাওয়া যে বাড়ী গাড়ি অর্থবিত্ত তা না হলে যে আমাকে আমার পছন্দের ছেলের কাছে বিয়ে দিবে না।

কান্না করে ফোনটা রেখে দিলাম। আবারও ফোন। পরে সব খুলে বললাম তখন ও আমার ওপর অনেকটা রাগান্বিত হয়ে ফোন কেটে দিল আমিও পরে ফোন দিয়েছিলাম।

কিন্ত কান্না জনিত কণ্ঠে ও আমাকে বলছে আমি কেন আগে বলিনি; এমন জানলে হয়তো সেই আকাশের দিকে চেয়ে হাসিমাখা মনটাকে বুঝিয়ে নিতো। কিন্তু এতটা বছর পর এসে যত্নে গড়া স্বপ্ন, অনুভূতি গুলোকে এই ভাবে হত্যা করতে হবে তা কখনোই ভাবিনি।

কবি নীলকন্ঠ জয়

সকল পোস্ট : নীলকন্ঠ জয়