বাজরিগার পাখি পালন যা জানা জরুরি

অনেকের অনেক রকম সখ থাকে। পাখি পালন তার মধ্যে অন্যতম। আজ আগামীতে আমরা ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি পাখি পালন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আজ বাজরিগার পাখি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় পোষা পাখি বাজরিগার। যারা শখের বসে পাখি পালন করেন কাছে খুবই পরিচিত একটি পাখি বাজরিগার। শুধু শখ করে নয়; এখন বাণিজ্যিক ভাবেও বাংলাদেশে এটি খুবই জনপ্রিয়। তবে এটি আমাদের দেশি পাখি নয়, মূলত অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল অঞ্চলে বনাঞ্চলের পাখি বাজরিগার। তাছাড়াও তাস্মেনিয়া এবং আশপাশের কয়েকটি দেশেও এই পাখি দেখতে পাওয়া যায়।


বাজরিগার পাখির আকার
বনে বাস করে এমন বাজরিগার লম্বায় প্রায় ৬.৫ থেকে ৭ ইঞ্চি এবং ওজন ২৫ থেকে ৩৫ গ্রাম পর্যন্ত হয়। তবে খাঁচায় পালা পাখি আকারে ও ওজনে একটু বড় হয়। খাঁচায় পালনকারা পাখি লম্বায় ৭ থেকে ৮ ইঞ্চি হয়ে থাকে। আর ওজন ৩৫ থেকে ৪০ গ্রাম পর্যন্ত হয়।

বাজরিগার পাখির রং
বাজরিগার প্রাকৃতিকভাবে সবুজ ও হলুদের সঙ্গে কালো রংয়ের হয়। এছাড়াও থাকে নীল, সাদা, হলুদ রংয়ের ছোপ। সারা গায়ে পেটের নিচে আকাশি, হলুদ বা অন্য রংয়েরও হয়ে থাকে।

স্ত্রী ও পুরুষ পাখি চেনার উপায়
অনেকেই আছেন শখে বাজরিগার পোষেন। তবে কোনটি ছেলে বা মেয়ে পাখি তা বুঝতে পারেন না। পরে দেখা গেল পাখি ডিম দেয়া না। কিছু বিষয় লক্ষ্য করলে এটি বোঝা খুবই সহজ।

পুরুষ পাখি
একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ বাজরিগারের নাকের ছিদ্রের চারপাশে নীল রংয়ের ঝিল্লি থাকে। এই ঝিল্লি কপাল ও ঠোঁটের মাঝে নাকের ছিদ্রসহ বিস্তৃত। অল্পবয়স্ক পুরুষ বাজরিগারের নাকের ছিদ্রের চারপাশে যে ঝিল্লি থাকে, সেটার রং হয় গোলাপি বা বেগুনি। সময়ের তালে এই রংয়ের পরিবর্তন হয়। ৬-৭ মাস বয়সে এই রং হয়ে যায় নীল।

স্ত্রী পাখি
পূর্ণবয়স্ক একটি স্ত্রী বাজরিগারের নাকের ছিদ্রের চারপাশে বাদামি রংয়ের ঝিল্লি দিয়ে ঘেরা থাকে। এটিও তার কপাল ও ঠোঁটের মাঝে নাকের ছিদ্রসহ বিস্তৃত। অল্পবয়স্ক স্ত্রী বাজরিগারের নাকের চারদিকের ঝিল্লি হালকা সাদা, গোলাপি বা নীল রংয়ের হয়। আবার নীল-সাদার সংমিশ্রণও হতে পারে। ৬-৭ মাস বয়সে এই রং পরিবর্তিত হয়ে বাদামি রংয়ে পরিণত হতে থাকে।

বাজরিগারের বয়স বোঝার উপায়
৩-৪ মাস বয়সের বাজরিগার স্ত্রী না পুরুষ তা চেনা তেমন সহজ নয়। তবে কিছু লক্ষণ দেখে বাজরিগারের বয়স চেনা যায়।

অল্পবয়স্ক বাজরিগারের কপালে সাধারণত ডোরাকাটা দাগ থাকে। পূর্ণবয়স্ক বাজরিগারের কপালের রং পূর্ণতা পেয়ে ডোরাকাটা দাগ দূর হয়ে যায়।

অল্পবয়স্ক বাজরিগারের চোখ বেশ বড় হয়। চোখের মণির চারপাশে কোনো রিং থাকে না। পূর্ণবয়স্ক বাজরিগারের চোখ বেশ ছোট। চোখের মণির চারপাশে রিং তৈরি হয়। আর চোখ ২টি একটু ভিতরে ঢুকে থাকে।

বাজরিগার পাখি পালনের জন্য প্রাথমিক কিছু পরামর্শ
শৌখিন মানুষরা বাড়িতে আলাদা সৌন্দর্য আনতে বাজরিগার পোষেন। এই জাতের পাখি পোষার জন্য খুব বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না, শুধু দরকার সঠিক পরিচর্যা। মাত্র ১০ ফুট দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতার একটি ঘরে প্রায় ১০০ জোড়া বাজরিগার পাখি পোষা যায়। যারা নতুন বাজরিগার পাখি পুষবেন বলে চিন্তা ভাবনা করছেন তাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ন পরামর্শ।
কয়েকজন পাখি পালকের সাথে কথা বলুন। তারা কিভাবে পাখি পালে তা লক্ষ্য করুন।
প্রাথমিক অবস্থায় লাভের চিন্তা করবেন না। আগে পাখি সুস্থভাবে পালন করা শিখুন।
পাখি কেনার আগে পাখি রাখার জন্য যতাযথ স্থান এবং খাচার ব্যবস্থা করুন।
প্রথমে ২ জোড়া কম বয়সী পাখি কিনুন, ছেলে-মেয়ে পাখিকে আলাদা রাখুন।
বাজরিগার পাখির বয়স সর্বনিম্ন ৮ মাস হলে ব্রীডিং অবস্থায় আসলে ছেলে মেয়ে পাখিকে একসাথে দিন।
সঠিক নিয়মে পাখি পালন না করলে এরা আপনার সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
বাজরিগার পাখির আয়
বাজরিগার পাখির বয়স যখন ৮ মাস হবে, তখন থেকেই ডিম দেওয়া শুরু করবে। ২ মাস বয়সী প্রতি জোড়া বাচ্চা প্রায় ৩শ টাকা দরে বিক্রি করা যায়।

বাজরিগার প্রতি ৩ মাস পরপর ৬ থেকে ৮টি বাচ্চা ডিম থেকে ফোটায়। এভাবে সকল খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে ভালো টাকা আয় করা যায় খুব সহজেই।

অল্প পরিসরে বিনিয়োগ করে, প্রতিদিন মাত্র ২-৩ ঘণ্টা সময় দিয়ে ৪ মাসের মধ্যে বিনিয়োগ করা টাকাসহ লাভ উঠিয়ে আনা সম্ভব।

বাজরিগার ব্রিডিং
বাজরিগার ব্রিডিং করানোর পূর্বে নিচের বিষয় গুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে:

পুরুষ ও নারী পাখি
একটি সঠিক মাপের খাঁচা (সর্বনিম্ন ১৮ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য, ১৮ ইঞ্চি প্রস্থ এবং উচ্চতা ২৪ ইঞ্চি)
খাঁচার ভিত্র বা বাইরে বলিষ্ঠ পাখির বাসা, বক্স বা হাঁড়ি
বীজ এবং প্রচুর পরিমাণে পানি
খনিজ ব্লক এবং ক্যালসিয়াম ব্লক
দিনের আলো (পাখির যেন দিন আর রাত সম্পর্কে বুঝতে অসুবিধা না হয়)
গ্রীষ্মকালে পাখিদের প্রয়োজন অনুযায়ী পানি স্প্রে করুন
শীতকালে পাখিদের ঠাণ্ডা ও বাতাসের হাত থেকে রক্ষা করা
অন্যান্য পাখির ঘর বা কেইজ যা একে অপরকে প্রজননে উৎসাহিত করতে পারে
প্রতি সপ্তাহে ফল / শাকসব্জী ২-৩ বার
আপনার উভয় পাখি প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে। পাখিদের বয়স অন্তত ১২ মাস হলে তাদের অতিরিক্ত মিলেট এবং এগফুড দেয়া শুরু করুন। এই অবস্থায় আপনার বাজরিগার যদি কলোনিতে থাকে তবে তাদের জোরা নিশ্চিত হলে আলাদা সঠিক মাপের খাঁচায় রাখতে হবে।

এরপর পাখিদের নিম্ন লিখিত কারণগুলো লক্ষ করুণ:
পুরুষ পাখিটি লাফিয়ে লাফিয়ে মেয়ে পাখিটির পাসে বসে মেয়ে পাখিটিকে কাঠঠোকরা পাখির মত টোকা দেওয়া
পুরুষ পাখি মেয়ে পাখিটির ডানার উপর পা উঠাতে চেষ্টা করা
পুরুষ পাখি মেয়ে পাখিটিকে খাবার খাইয়ে দেওয়া
মেয়ে ও পুরুষ পাখির ব্রিডিং মুড লক্ষ্য করা (নাকের রং দেখে)
পাখির মধ্যে এইসব লক্ষণ দেখা গেলে এই সময় পাখির খাঁচার ভিতর হাঁড়ি বা বক্স দিন।পাখি বসার জন্য প্লাস্টিকের পাইপের পরিবর্তে গাছের ডাল ব্যবহার করুন।

এই সময় পাখির প্রচুর শক্তি প্রয়োজন হয় বলে পাখিদের অতিরিক্ত খাবার, মিনারেল ব্লক এবং ক্যালসিয়াম ব্লক দিন।

পাখির ব্রিডিং মুড লক্ষ্য করার পর বক্স বা হাঁড়ির ভিতর কিছু খড়কুটো দিয়ে দিন। মেয়ে পাখিটি এই খড়কুটো গুলো ফেলে দেওয়া শুরু করলে আপনি বুঝতে পারবেন পাখি ডিম পাড়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এই পদ্ধতি আপনাকে পাখির ডিম পাড়ার আগাম বার্তা দেয়।

পাখিরা মেটিং করা শুরু করলে প্রথম ডিমটি পারতে সাধারণত ১০ দিন সময় লাগতে পারে এবং পরের ডিমগুলো প্রথম ডিম দেয়ার পর পর দিন করে পাড়তে শুরু করে। মাঝে মাঝে পাখিরা একদিন বাদ দিয়েও ডিম পাড়তে পারে। প্রথম ডিম পাড়ার ১৮-২৩ দিনের মধ্যে বাজরিগার প্রথম বাচ্চা ফুঁটায়। এটি নির্ভর করে পাখির ডিমে তাপ দেয়ার উপর। অনেক সময় বাজরিগার ৩ টি ডিম পাড়ার আগে ডিমে তাপ দিতে বসে না।

এই সময় মেয়ে পাখিটির যত্নের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে যেন পাখিটি এই কন্ডিশন থেকে বেড়িয়ে না যায়। যদি মাদী পাখিটি কোন কারন ছাড়াই ডিম ফোটানোর আগেই ডিম এ তাপ দেয়া থেকে উঠে যায় তাহলে ধারণা করা যায় যে এই মাদী পাখিটি ভাল মা নাও হতে পারে।

সতর্কতা
পাখির খাঁচার সামনে দিয়ে ঘন ঘন যাওয়া-আসা না করা
খাঁচার সামনে খেলাধুলা, উচ্চ শব্দে চেঁচামেচি না করা
পাখিদের ডিম তাপ দেয়া অবস্থায় ঘন ঘন ডিম দেখতে যেয়ে পাখিদের উত্তক্ত না করা
বাজরিগার পাখি ডিম পাড়ার লক্ষন সমূহ

(১) সেয়ার এর রঙের পরিবর্তন: সেয়ার এর রঙ সাদা থেকে ধীরে ধীরে বাদামী রঙ্গে রূপান্তরিত হবে।

(২) আচার-আচরনে পরিবর্তন: শরীরে হরমোনের প্রভাবে সে আগ্রাসী ও স্থানাভাবাপন্ন হয়ে উঠবে। তার ভিতর সবসময় তার বাসাকে রক্ষার একটা প্রবনতা দেখা যাবে।

(৩) অতিরিক্ত চর্বণ: প্রকৃতিতে স্ত্রী পাখি তার বাসা বড় এবং ফাঁপা বানানোর জন্য কামড়াতে থাকে এবং বাসা থেকে ময়লা ফেলে দেয়। আর খাঁচায় সে হাড়ির প্রবেশ পথ কামড়াতে থাকে এবং খাবারের বাটি থেকে খাবার ফেলে দিতে থাকে।

(৪) অন্ধকার আরামদায়ক স্থানে বেশি সময় কাটানো: সে কিছুটা অন্ধকার, আরামদায়ক জায়গায় বেশি সময় কাটাবে।

(৫) ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ: যে স্ত্রী পাখি খুব একটা বেশি মিনারেল ব্লক না ক্যাটলফিস বোন খায় না, ডিম পাড়ার আগে ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করার জন্য সে একেবারে একটা পুরো খেয়ে শেষ করে ফেলবে।

ব্রিডিং প্রতিরোধক ব্যবস্থা
অপরিণত বয়সে ব্রিডিং এড়াতে বা ঘন ঘন বাচ্চা দেয়া এড়াতে আপনাকে অবশ্যই পেয়ার
বা জোড়া গুলোকে বিশ্রাম দিতে হবে। তাই অনাকাঙ্খিত ব্রিডিং এড়ানোর কিছু কিছু
পদ্ধতি আছে, সেগুলো হলো:
(১) দিনের আলোক সময় কমিয়ে দেয়া। পাখির ঘরে পর্দার ব্যবস্থা থাকলে ভালো।

এতে পর্দা টেনে দিয়ে পাখির ঘর অন্ধকারাচ্ছন্ন করে দেয়া যায়। দিন ছোট হলে স্ত্রী পাখি ডিম দিতে অনুৎসাহিত হবে।

(২) পাখিকে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার না দিয়ে শাক-সবজী, ফলমূল ইত্যাদি খাবার বেশি দিতে হবে।

(৩) পাখির থাকার জায়গা/পরিবেশ পরিবর্তন করাটাও একটা সহজ পদ্ধতি। যেমন পাখির খাঁচার বসার কাঠি গুলো বদলে দেয়া, খাঁচায় নতুন কোন খেলনা দেয়া, বা খাঁচা অন্যত্র

সরিয়ে নেয়া ইত্যাদি। নতুন পরিবেশে গেলে পাখি থিতু না হওয়া পর্যন্ত ব্রিডিং অবস্থায় আসবে না। সোজা কথা হল তার পরিচিত পরিবেশ পাল্টে দিতে হবে।

(৪) স্ত্রী-পুরুষ আলাদা করে রাখা হল আরেকটি সহজ পদ্ধতি। তার পরেও কিছু কিছু

স্ত্রী পাখি ডিম দিয়ে দিতে পারে, সেক্ষেত্রে সেগুলো ফেলে দিতে হবে। কারন সেগুলো থেকে বাচ্চা ফুটবে না।

খাবার তালিকা
প্রতিদিন বাজরিগারের খাবার কি কি থাকতে পারে এবং কি পরিমানে থাকতে পারে তা দেখে নিন।

বাজরিগারের খাদ্য তালিকায় যেসব শস্যদানা রাখা যায় তার ৫ কেজি

খাবারের মিশ্রণের উপকরণ এবং পরিমাণ:
৫ কেজি সিডমিক্স এ যা যা থাকতে পারে-

১। কাউন: ৩ কেজি
২। চিনা: ০.৫ কেজি
৩। গুজি তিল: ০.২৫ কেজি
৪। পোলাও চালের ধান: ১ কেজি
৫। ক্যানারি সিড: ০.২৫ কেজি

এগুলার বাইরে অন্যকিছু দরকার নেই, সূর্যমুখির বীজ বারজিগার কে দেয়া উচিত নয় কারণ এটা বাজরিগারের এর শরীরে ফ্যাট বাড়ায় এবং অস্বাস্থকর।

অন্যান্য খাবার
সিদ্ধ ডিম, পালং শাক, কলমি শাক, বরবটি, মটরশুটি, গাজর, আপেল এগুলো মাঝে মাঝে কাচা দেয়া যায়। কখনো কখনো খাটি মধু এবং ঘৃতকুমারির শাস পানিতে মিশিয়ে দিতে পারেন।

বাজরিগার পাখির খাঁচা কেমন হওয়া উচিত
বাজরিগার পাখির খাঁচা কেমন হওয়া উচিত? খাঁচায় পাখি পালতে বিভিন্ন কেইজ-এর প্রয়োজন পরে। অনেক সময় কেইজ অব্যবস্থাপনার জন্য পাখির কষ্ট হয়। কেইজ নিয়ে ধারনা দেয়ার জন্য খাঁচা হতে হবে ৫ ধরনের:

১। বেবি কেইজ: আপনার ব্রিডিং পেয়ার থেকে যেই বাচ্চা আসবে তাদের উড়াউড়ি করার জন্য আপনাকে কমপক্ষে ২০×১৮×১৬ বা ১৮×১৮×১৮ খাঁচা প্রয়োজন যাতে আপনি ৮ টি পাখি অনায়াসে রাখতে পারেন। বেবি কেইজ থাকলে অনেক বড় জাগা পেয়ে ভালোভাবে ওরা উড়বে তাতে পাখি সুস্থ থাকবে।

২। মেইল ও ফিমেইল কেইজ (আলাদা): মেইল কেইজ ও বেবি কেইজ এর মত একি মাপের রাখতে পারেন। মেইল কেইজ থাকলে যেই পেয়ার রেস্ট এ দিবেন তাদের মেইল এই কেইজ এ থাকবে অনুরুপ ফিমেইলদের জন্য ও আলাদা করে কেইজ রাখবেন।

৩। ব্রিডিং কেইজ: আমরা সাধারণত একটা ভুল করি যেই কেইজ এ পাখি কিনে আনি ১৮×১৪×১২ মাপের তাতে তাদের আজিবন রাখি আর কেউ কেউ তো আরও ছোট কেইজ এও রাখি। অথচ ব্রিডিং কেইজ এর সর্বনিম্ন মাপ হল ২০×১৮×১৬ বা ১৮×১৮×১৮ ইঞ্চির যেটা আমরা অনেক ব্রিডার রাখি না। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রিডিং কেইজ হল ২৪×১৮×১৮ ইঞ্চির। সর্বনিম্ন কেইজ ২০×১৮×১৬ বা ১৮×১৮×১৮ ইঞ্চির হলে যেই সুবিধা হয় তাহল পাখির খাবার, পানি, হাড়ি ও অন্যান্য পট রাখতে সুবিধা হবে, পাখির খেলনা রাখতে সুবিধা হবে ইত্যাদি।

৪। মেডিকেল কেইজ: কোন অসুস্থ পাখি থাকলে তাদের চিকিৎসার জন্য আলাদা কেইজ রাখতে হয়।

৫। নতুন পাখির কেইজ: বাজার থেকে পাখি কিনেই সরাসরি পাখির ঘরে না রেখে মাসখানেক আলাদা রাখতে হয় পর্যবেক্ষণের জন্য। তার জন্য আলাদা কেইজ রাখতে হয়।

রোগ-নিরাময়
সাধারণত এই পাখির তেমন কোনো অসুখ হয় না। তবে খুব বেশি হলে রাণীক্ষেত রোগ হতে পারে। সবুজ মল ত্যাগ করা এই রোগের লক্ষণ। এছাড়া পাখায় একধরণের ঘা হতে পারে। এই পাখি সাধারণত ৫-৬ বছর বাঁচে।

যে কোনো রোগের ওষুধের জন্য ঢাকার কাঁটাবনের পাখির দোকানে গেলেই সমাধান পাওয়া যাবে।

কোথায় পাবেন
সারাদেশেই বাজরিগার পাখি পালন হয়। রাজধানীতে কাঁটাবন, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গুলিস্থানসহ বিভিন্ন হাটে এই পাখি পাওয়া যায়।