আজ আগামী- মাথা ব্যথা থেকে শুরু করে পায়ে ব্যথা, সব ব্যথাতেই ব্যবহার হচ্ছে এই ওষুধ। জ্বর হলেও আমরা এই ওষুধ খাই।সাধারণত এই ওষুধটি প্যারাসিটামল নামেই পাওয়া যায়। এক কথায় আমাদের হাতের কাছে থাকা ম্যাজিক ড্রাগের নাম প্যারাসিটামল।ওষুধটি কেনার জন্য কোনো প্রেসক্রিপশন লাগে না। যে কোনো মানুষ সহজেই কিনে নিতে পারেন। কেনার পরই নিজ ইচ্ছে মতো খাচ্ছেন। তবে এভাবে প্রতিদিন ওষুধটি খেলে শরীরে সমস্যাও দেখা দিতে পারে।এ নিয়ে একটি গবেষণাটি করেছে এডিনবুরা বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ১১০ জন হাই প্রেশারে আক্রান্ত রোগীর ওপর গবেষণা চালায়। এই মানুষগুলোকে দিনে ৪ বার ১ গ্রাম করে প্যারাসিটামল ওষুধটি দেওয়া হয়। দেখা যায়, ৪ দিন পর এই মানুষগুলোর ব্লাড প্রেশার বেড়ে গিয়েছে। এমনকী হার্টের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে ২০ শতাংশ।গবেষণা বলছে, ওষুধটা হৃদরোগে আক্রান্ত মানুষের বিশেষভাবে সচেতন হয়ে খাওয়া উচিত।ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মাকোলজির বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডেভিড ওয়েব বলেন, আমরা সব সময় ভেবে এসেছি ব্লাড প্রেশার বাড়ানোর ক্ষেত্রে আইউবুপ্রোফেন ওষুধটি দায়ী। সেক্ষেত্রে এর বিকল্প হতে পারে প্যারাসিটামল। কিন্তু এদিকে এই গবেষণা দেখাল হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব ওষুধটি খাওয়া বন্ধ করা উচিত।গবেষণা থেকে আরও জানা যায়, যে মানুষগুলো ব্যথার জন্য প্রায়ই প্যারাসিটামল খেয়ে থাকেন, তাদের আরও সতর্ক হয়ে ব্লাড প্রেশারের ওষুধ খেতে হবে।প্রফেসর জেমস ডিয়ার বলেন, প্যারাসিটামল খাওয়ার ২ সপ্তাহের মধ্যে ব্লাড প্রেশার বাড়তে থাকে। আর ব্লাড প্রেশার বাড়ার কারণে হৃদরোগের সমস্যা হতে পারে।কলকাতার আমরি হাসপাতালের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রুদ্রজিৎ পাল বলেন, যে কোনো ওষুধ থেকেই সমস্যা হতে পারে। প্যারাসিটামল থেকেও হওয়া সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে প্যারাসিটামল খাওয়ার আগে চারটি বিশেষ শ্রেণিকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। প্রথমত, শিশুদের। দ্বিতীয়ত, বয়স্ক ব্যক্তিদের। তৃতীয়ত, যাদের লিভারে ইতিমধ্যেই সমস্যা রয়েছে। চতুর্থত, এর আগে জ্বর বা ব্যথার ওষুধ খেয়ে অ্যালার্জির ইতিহাস থাকলে।এই শ্রেণির বাইরে থাকা যে কোনো ব্যক্তি আপাতত প্যারাসিটামল খেতে পারেন। অন্তত খুব বেশি সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে সেক্ষেত্রেও খুব লো ডোজে প্যারাসিটামল খেতে হবে। ডোজ বাড়াতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।