কী হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের এরিয়া ৫১ এ?

নাসির আহমেদ কাবুল ।। এরিয়া ৫১ নামটি অনেকেই শুনেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর অত্যন্ত গোপনীয় এ ফ্যাসিলিটির অবস্থান নেভাডা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে। জায়গাটিতে শুধু বিমান নয়, অনেক গোপনীয় বিষয় নিয়ে পরীক্ষা নীরিক্ষা চালানো হয়, তবে এখানে ঠিক কোন কোন বিষয় নিয়ে গবেষণা চলছে, তা জানার উপায় নেই। এরিয়া ৫১ রহস্যের বেড়াজালে বন্দী আছে দীর্ঘদিন ধরে।
অত্যন্ত দুর্ভেদ্য চাদরে মোড়ানো বলে এরিয়া ৫১ নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে দিনকে দিন। এ রহস্য থেকেই কালক্রমে জন্ম নিয়েছে বেশ কিছু কন্সপিরেসি থিওরি। বলা হয়, এলিয়েন নিয়েও গবেষণা করা হয় এখানে। মার্কিনীদের চাঁদে যাওয়া নিয়ে সন্দেহ সংশয়ের কথা শোনা যায়, চাঁদের যাওয়ার নাটক নাকি এই এরিয়া ৫১-তে সংঘটিত হয়েছে।
১৯৮৯ সালের কথা। বব লাজার নামের একজন দাবী করে বসেন যে, তিনি কিছুদিনের জন্য এরিয়া ৫১ এর একটি অংশে কাজ করেছিলেন, যার নাম এস-৪। সেই জায়গাটি এতটাই গোপনীয় যে, ঐ প্রজেক্টে তিনি এবং তার অন্যান্য সহকর্মীদের যে বাসে করে নেওয়া হয়েছিল, তার জানালাগুলো বন্ধ ছিল যাতে করে তারা যাতায়াতের রাস্তা মনে রাখতে না পারেন।
এস-৪ এর বিমান ছাউনিতে বব লাজার এমন সব ফ্লাইং সসার দেখতে পেয়েছিলেন, যেগুলো কোনোভাবেই পৃথিবীতে তৈরি হতে পারে না বলে মনে করেন তিনি। সেগুলোর শক্তি সরবরাহ করা হচ্ছিলো এন্টিম্যাটার রিঅ্যাক্টরের মাধ্যমে, জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিলো লালচে-কমলা বর্ণের একটি পদার্থ যার নাম ‘এলিমেন্ট-১১৫’। সসারটি এতটাই শক্তিশালী গ্র্যাভিটি ওয়েভ তৈরি করছিল যে, সেটার উদ্দেশে কোনো গলফ বল ছুঁড়ে মারলে সেটাও ফিরে আসছিল!
বব লাজারের মতে, সামরিক খাতে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে তৈরি করছিল ইউএফও (আনআইডেন্টিফাইড ফ্লায়িং অবজেক্ট)! দুর্ভাগ্য বলতে হবে লাজারের। একবার বন্ধুদের নিয়ে তিনি লুকিয়ে সেসব সসারের টেস্ট ফ্লাইট দেখতে গিয়ে ধরা পড়ে যান। এরপরই তার চাকরি চলে যায়।
ইউএফও’র কথা যখন এসেছে, তখন অবধারিতভাবেই আরেকটি যে সত্তার কথা আসে তা হলো এলিয়েন অর্থাৎ ভিনগ্রহের প্রাণী। আর এই ভিনগ্রহের প্রাণীদের নাকি জেলখানার আসামীর মতোই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এরিয়া-৫১-এ! এমনটাই দাবি করেছেন বব লাজার।
একবার যখন তিনি এস-৪ এর একটি হলওয়ে ধরে যাচ্ছিলেন, তখন পাশের একটি ঘরের ছোট জানালা দিয়ে সামান্য সময়ের জন্য উঁকি দিয়ে ঘরের ভিতরে ছোট, ধূসর বর্ণের একটি প্রাণীকে সাদা কোট পরিহিত দুজন মানুষের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলেন তিনি!
১৯৯৭ সালে এমনটাই দাবি করেছিলেন ভিক্টর নামে আরেক ব্যক্তি। তিনি এরিয়া ৫১ এ চাকরি করেন বলে দাবি করেছিলেন। তিনিও এলিয়েনদের জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারটি দেখেছিলেন বলে জানান। এমনকি তিনি একটি ঝাপসা ভিডিও করেছিলেন যেখানে দেখা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর হাতে গুলি খাওয়া এক বহির্জাগতিক পাইলটের সাথে টেলিপ্যাথির মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছেন এরিয়া ৫১ এর একজন অফিসার।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি দিককার কথা। হঠাৎ করে সতের মিনিটের একটি ভিডিও টেপ ছড়িয়ে পড়েছিল। ভিডিওতে দেখা যায় বায়ো-হ্যাজার্ড প্রোটেকশন স্যুট পরিহিত একদল মানুষ ছোটখাট একটি এলিয়েনের দেহ নিয়ে গবেষণা করছেন। তবে ভিডিওটি নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে অনেকেই জানান যে, গবেষক দলের অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি নাড়াচড়ার ধরনটা ছিল বেশ আনাড়ি রকমের, যা একে ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত করে! বছরখানেক পরে ভিডিওটির পরিচালক আরেকটি ডকুমেন্টরি বানান। সেখানে তিনি দাবি করেন যে, তাদের দলটি আসলেই এলিয়েনের ময়নাতদন্ত করেছিল। তবে মূল ভিডিওর ক্লিপটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা নকল আরেকটি ভিডিও বানিয়ে সেটিই বাজারে ছেড়েছিলেন!
২০১৪ সালে সর্বশেষ এমন আরেকটি ভিডিও দেখা যায়। সেই ভিডিওতে প্রায় ৪ ফুট লম্বা একটি এলিয়েনের আংশিক কাটা মাথা দেখা গিয়েছিল।
চাঁদের বুকে প্রথম পা রাখার পর মহাকাশচারী নীল আর্মস্ট্রংয়ের নামটি স্থান করে নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। তবে এরিয়া ৫১ কনস্পিরেসি থিওরিস্টদের মতে, অ্যাপোলো-১১ দিয়ে চাঁদে অবতরণের ঘটনাটি স্রেফ ভাঁওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই না! এ ধারণাটির প্রবক্তা কনস্পিরেসি লেখক বিল কেসিং। তার মতে, ষাটের দশকের শেষের দিকে নাসার বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন যে, তীব্র তেজষ্ক্রিয়তার জন্য চাঁদের বুকে অবতরণ করা কোনো মানুষ আর বেঁচে ফিরতে পারবে না! কিন্তু এতদিন ধরে চালানো এই প্রোগ্রামও বাতিল করা সম্ভব ছিল না। তাই তারা আশ্রয় নেয় ইতিহাসের অন্যতম সেরা জালিয়াতির!
এজন্য অ্যাপোলো-১১ জনগণের দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যাওয়ার পরই গোপন একটি মিলিটারি এয়ারক্রাফটে করে ক্রুদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পূর্বপ্রস্তুত একটি মুভি স্টেজে! এর কিছুদিন পরে সেখানেই স্থাপন করা সব ক্যামেরার সামনে অভিনয় করেন নীল আর্মস্ট্রং এবং বাজ অলড্রিন। এরপর সেই ভিডিওই বিশ্বজুড়ে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয় নাসার পক্ষ থেকে।
এরিয়া ৫১-এ যে আসলে কী আছে, সেই সম্পর্কে জনগণের ধারণা বেশ কম। এই কম ধারণা থেকেই পরবর্তীতে জন্ম নিয়েছে নানা কল্পনার শাখা-প্রশাখা। এই যেমন মাটির তলার বাঙ্কারটির কথা বলা যায়। কোনো কোনো কন্সপিরেসি থিওরিস্টের মতে, এরিয়া ৫১ এ মাটির নিচে বিশাল বাঙ্কার গড়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। আর সেখানেও রয়েছে প্রযুক্তির অত্যাধুনিক বিমানের আনাগোনা। সেই বিমানগুলোকে সেখানে লুকিয়ে রাখা হয় যাতে করে স্যাটেলাইটের মাধ্যমেও সেগুলোর কোনো হদিস কেউ না পায়। কারো মতে সেই বাঙ্কারগুলো ৪০ তলা ভবনের সমান উঁচু!
আবারো বব লাজারের স্মরণাপন্ন হওয়া লাগে বাঙ্কারের কথায়। তার মতে, এলিয়েনদের সেই স্পেসক্রাফটগুলো লুকিয়ে রাখা হয় পাহাড়ের নিচে। সেই বাঙ্কারের প্রবেশপথে রয়েছে বিশাল বড় দরজা, যার ডিজাইন আশেপাশের মাটির মতোই করা। ফলে দূর থেকে দেখে একে পাহাড়ের অংশই ভাববে যে কেউ!
এখন যে কন্সপিরেসি থিওরির কথা বলব, সেটা শুনলে আশ্চর্য হবার পাশাপাশি বেশ মজাও লাগার কথা। কারো কারো মতে, এরিয়া ৫১ এ আসলে একসাথে কাজ করছে আমেরিকান সরকার এবং ভিনগ্রহের প্রাণীরা।
তাদের ধারণানুযায়ী, সেখানে দুই পক্ষের মিলিত প্রচেষ্টায় মানুষ ও এলিয়েনের এমন সংকর প্রজাতি বানাতে কাজ চলছে যাদের দেখলে মনে হবে তারা মানুষ। কিন্তু শারীরিক ও মানসিকভাবে তারা হবে সেই এলিয়েনদের মতোই! তারাই নাকি ভবিষ্যতের পৃথিবীতে নেতৃত্ব দিবে। অনেকে আবার কল্পনার ডানাকে আরো অনেক দূর প্রসারিত করে বলে যে, এখানে যে সংকর প্রজাতির জন্ম দেয়া হচ্ছে, তারা আসলে এলিয়েন নিয়ন্ত্রিত। ভবিষ্যতে যদি কোনো কারণে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের দরকার পড়ে, তাহলে এলিয়েনরা গবেষণাগারে জন্মানো এসব সংকর প্রাণীর অঙ্গই ব্যবহার করবে!
মাঝে মাঝেই আমাদের ইচ্ছা করে অতীতে ফিরে গিয়ে নিজের ছোটবেলার সেই সত্তাটাকে একবার দেখে আসতে, কৈশোরের রঙিন সময়গুলোতে ফিরে যেতে কিংবা জীবনে নেওয়া ভুল সিদ্ধান্তগুলো অতীতে গিয়ে কোনোভাবে পাল্টে দিতে। এছাড়াও অতীতের বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের সাথে সামনাসামনি দেখা করতে কিংবা অতীতের বিখ্যাত কোনো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হতেও ইচ্ছা করে কারো কারো। শুধু অতীতের কথাই বা বলছি কেন? বর্তমান নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় থাকা মানুষগুলো মাঝে মাঝেই জানতে চায় তাদের ভবিষ্যতে কী আছে তা জানতে। এ সবই সম্ভব হতো যদি সময় পরিভ্রমণ নামক বিষয়টি সম্ভব হতো।
এবার আসা যাক টেলিপোর্টেশনের কথায়। সায়েন্স ফিকশন গল্প ও সিনেমার পাগলেরা এ বিষয়টির সাথে পরিচিত অনেক আগে থেকেই। মুহূর্তের মাঝেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলে যেতে পারার বিষয়টিকেই সাধারণত বলা হয় টেলিপোর্টেশন। এর মাধ্যমে পদার্থ ও শক্তি উভয়েরই স্থানান্তর সম্ভব বলে মনে করা হয়। মানব কল্পনার এ বিষয় দুটো নিয়ে এরিয়া ৫১ এ কাজ চলছে বলে মনে করেন অনেকে।
এতটুকু পড়ার পর যে কারো মনেই প্রশ্ন জাগবে যে, এত কনস্পিরেসি থিওরি যে জায়গাটাকে ঘিরে, সেখানে আসলে হচ্ছেটা কী? আর এত রহস্য জন্মালোই বা কীভাবে? এমন প্রশ্ন আসাটা খুবই স্বাভাবিক। এখন তাহলে এ দুটো প্রশ্নের উত্তরই খোঁজা যাক।
এজন্য আমাদের চলে যেতে হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়টাতে। তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়নের মতিগতি, তারা কী নিয়ে গবেষণা করছে, তারা কোনো আকস্মিক হামলা করে বসবে কি না ইত্যাদি নানাবিধ বিষয় নিয়ে বেশ উত্তপ্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদদের মস্তিষ্ক। পঞ্চাশের দশকের শুরুর দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য অপেক্ষাকৃত নিচু দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমান পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে সোভিয়েত বাহিনীর হাতে সেগুলো ভূপাতিত হবার আশঙ্কা ছিল।
অবশেষে ১৯৫৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার এক গোপন প্রোজেক্টের অনুমোদন দেন। সেই প্রোজেক্টের লক্ষ্য ছিল এমন এয়ারক্রাফট বানানো যেগুলো অনেক উচ্চতা থেকেও শত্রæপক্ষের বিভিন্ন বিষয়ে নজরদারি করতে পারবে। এ প্রোগ্রামের ফসল হিসেবেই পরবর্তীতে তারা তৈরি করেছিল ইউ-২ স্পাই প্লেন।
এগুলোর চালনার প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষানিরীক্ষা চালানোর জন্য দরকার ছিল লোকালয় থেকে দূরবর্তী গোপন কোনো জায়গা। শেষ পর্যন্ত নেভাডা মরুভূমির দক্ষিণে গ্রæম লেকের কাছাকাছি এলাকায় সন্ধান মেলে পছন্দনীয় সেই জায়গার। এ জায়গাটিই আজ সকলের কাছে এরিয়া ৫১ নামে পরিচিত।
১৯৫৫ সালের জুলাই থেকে ইউ-২ স্পাই প্লেনের টেস্ট ফ্লাইট শুরু হয়। মজার ব্যাপার হলো, এর অল্প কিছুদিনের মাঝেই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গা থেকে ‘ইউএফও’ দেখার দাবি করতে শুরু করে লোকজন। এর পেছনের কারণটা অবশ্য বেশ মজার।
ইউএফও দেখতে পাওয়ার দাবি করা মানুষগুলোর অধিকাংশই ছিল কমার্শিয়াল এয়ারলাইনের পাইলট। তৎকালে এরোপ্লেনগুলো সাধারণত ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার ফুট উচ্চতা দিয়ে উড়ত। মিলিটারি এরোপ্লেনগুলো উড়ত আরো উঁচু দিয়ে, প্রায় ৪০ হাজার ফুট। অনেকেই ধারণা করত যে, মানুষের তৈরি কোনো এরোপ্লেন এর বেশি উঁচু দিয়ে উড়তে পারবে না! আর ঠিক এ জায়গাতেই লেগে গেলো যত গোলমাল। কারণ ইউ-২ প্লেনটি উড়ে যেত ৬০ হাজার ফুটেরও বেশি উচ্চতা দিয়ে!
ব্যাস, এখানটায়ই মানুষের অবিশ্বাসÑ‘এটা মানুষের বানানো হতেই পারে না। এটা অবশ্যই এলিয়েনদের বানানো কোনো ইউএফও!’
বিমান বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবশ্য জানতেন যে, ইউএফও দাবি করা জিনিসগুলো আসলে তাদের গোপন প্রোজেক্টের ইউ-২ স্পাই প্লেন। কিন্তু এ সত্যটি জনসম্মুখে বলা বারণ ছিল তাদের জন্য। কারণ এটি ছিল একটি টপ সিক্রেট প্রোজেক্ট। ফলে লোকমুখে ছড়াতেই থাকে ইউএফও দেখতে পাওয়ার সেসব ভিত্তিহীন দাবি।
পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে ইউ-২ এর অপারেশন স্থগিত করা হলেও এরিয়া-৫১ এ চলতে থাকে অন্যান্য আরো স্টেলথ এয়ারক্রাফট নিয়ে গবেষণা। এগুলোর মাঝে ছিল wQj A-12, Bird of Prey, F-117A এবং Tacit Blue। ফলে গুজবের ডালপালার বিস্তৃতি কখনোই থেমে থাকেনি। এরপরই আসে ১৯৮৯ সালে বব লাজারের সেই বিষ্ফোরক মন্তব্য, যা সেখানে কাজ করা ইঞ্জিনিয়ারদের অনেকেই ভালভাবে নেননি। তখন সেখানকার বিজ্ঞানীদের মানসিক অবস্থা বোঝাতে গিয়ে প্রায় তিন দশক ধরে এরিয়া ৫১ নিয়ে গবেষণা করা এরোস্পেস ইতিহাসবিদ ও লেখক পিটার মার্লিন বলতে বাধ্য হন, `Some are even mad because they worked on these things and built these amazing planes. This is Earth technology.’
এরিয়া ৫১ এখনো বহাল তবিয়তেই চলছে। এখন এর সম্প্রসারণের কাজ হচ্ছে। তবে ভেতরে যে ঠিক কী নিয়ে কাজ চলছে, তা নিয়ে বাইরের জগতে বসে অনুমান করা খুব কঠিন। আর অনুমান করলেও সেটা সঠিক কিনা তা যাচাইয়ের কোনো উপায়ও নেই।
পিটার মার্লিনের মতে, এরিয়া ৫১ এ বর্তমানে উন্নততর স্টেলথ টেকনোলজি, অ্যাডভান্সড ওয়েপন, ইলেকট্রনিক ওয়্যারফেয়ার এবং ইউএভি (আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিক্ল) নিয়ে কাজ হচ্ছে। ওদিকে ইউ-২ বিষয়ক ইতিহাসবিদ ক্রিস পোককের মতে এখন সেখানে বিশেষ ধরনের এয়ারক্রাফট, রেডিও কমিউনিকেশনের অত্যাধুনিক কোনো প্রযুক্তি, ডিরেক্টেড এনার্জি ওয়েপন এবং লেজার নিয়ে গবেষণা চলছে।

কনস্পিরেসি থিওরিস্টদের মতো আপনিও কি মনে করেন ইউএফও, এলিয়েন, ওয়ান-ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট নিয়ে কাজ চলছে এরিয়া ৫১-এ? নাকি মার্লিন, পোককের মতো ইতিহাসবিদদের কথাই সঠিক যা বানচাল করে দেয় অনেকের স্বপ্নের ইউএফও আর এলিয়েনদের? সঠিক উত্তরটা কি আদৌ পাওয়া সম্ভব?

তথ্যসূত্র

1) popularmechanics.com/military/research/a24152/area-51-history/

2) nsarchive.gwu.edu/NSAEBB/NSAEBB443/

3) people.howstuffworks.com/10-area-51-conspiracies.htm

4) news.nationalgeographic.com/news/2011/05/pictures/110520-spy-plane-area-51-cover-up-crash-cia-conspiracy/

5) en.wikipedia.org/wiki/Area_51#UFO_and_other_conspiracy_theories