ফারহানা নীলার কবিতা

আমি যখন রোদ্দুর

আমি যখন রোদ্দুর,
শুষে নেই জল আর জলাধার।
আলোকিত আলোড়ন, সুশোভিত শোভা,
পুষ্পদাম আর শতদল… পুড়ে যায় রোদেলা সকাল।
চোখ কিনারে জলেশ্বরীও ভুলে যায় জলের অথৈ,
মন জানালায় বাষ্পীভুত ব্যথা; আবছা আয়নায় জমে পূঞ্জীভুত ছায়া,
পুড়ে যায় রোদেলা আকাশ।
আমি তখন রোদ্দুর,
আমি তখন সূর্যস্নানে সূর্যদেব।

রোদসী দিনে মধ্যাহ্ণ খরায় পুড়েছে একরত্তি ভালবাসা,
বুক পাঁজরে জ্বলন্ত চিতা; ভস্মীভুত বোধের নিশ্চল পাহাড়,
অতিক্রান্ত দিনের মধ্যভাগে আমার আগে চলে দীঘল ছায়া; পিছু পিছু এক আমি রোদ্দুর হবো বলে মাড়িয়েছি যাবতীয় আঁধার।
ধ্যানমগ্ন সূর্যমুখীর স্বপ্নালু চোখে রোদের হাতছানি; নেতিয়ে পড়া পত্রপল্লবে আলোর ঝলক।
আমি রোদ্দুর হতে হতে হতে….
পুড়েছি তাপাগ্নিতে।
জলের নিভৃতে শোকাচ্ছন্ন আচ্ছাদন,
এক শ্রাবণ শোকে বসন্ত বিলাপ।

আমি তখন রোদ্দুর…
আমি যখন রোদ্দুর…
আমি হবো রোদ্দুর।
রোদমাখা একটা গল্পের শুরু,
রোদসী সেই রোদের রোদ্দুর হবার ইতিহাস…
আমি তখন গল্পবাজ জীবনের মুখে ঠুলি এঁটে
ভূমিকা আর মুখবন্ধে লিখে রাখি… রোদ্দুর হবার মিথ্যে এক গল্প!
সত্য কথাটা বলতে পারি না… শুধু আমি তখন রোদ্দুর!

#নীল_কথন
১২/০৩/২০১৯
#ফারহানা নীলা

ঘুমোও সোনা

আচ্ছা আমরা দুজনে কতদিন ছিলাম একসাথে?
কতরাত আমরা কাটিয়েছি নির্ঘুম,আকাশের তারা গুণে!
কত বর্ষায় ভিজেছি জলের নহরে..
কত ফাগুনের আগুন জ্বেলেছি বুক পাঁজরে!

জানি আজ কিছুই মনে নেই…
এসব কথা আজকাল তুমিও মনে রাখো না,আমিও না!
মেকী পোশাকের ছাঁচে কেটেছি সময়,
আভরণের আধিক্যে হারিয়েছি নিরাভরণ সুন্দর,
দিনযাপনের রোজনামচায় অভিনয়ের আঁক কাটা!

পাহাড়ের কথা,সাগরের কথা,আকাশের কথা… থাক না আজ ওসব!
চলো শুনি নিশ্চল পাহাড়ের বুকে ঝর্ণার কলধ্বনি।
বুক পাঁজরে জলের কলতানে বিরহিয়া সুর শুনি…
জলের উচ্ছল স্রোতে চোখ ভিজিয়ে স্বপ্নগুলো রাখি… অনাদরে ভরুক না হয় ডালি!

ওসব দিন তো আজ বাসী…
কতবার আগলে তুমি সাগর হয়েছো,কতবার আমি গুটিয়ে শামুক!
কতবার তুমি পুরুষ হয়েছো,কতবার আমি নারী!
কতবার তুমি পাষানে বেঁধেছো মন,কতবার আমি মোমের পুতুল!
কতবার তুমি শাসন করেছো, শোষিত হয়েছি আমি!

থাক তবে এসব কথা….
চলো ছুঁড়ে ফেলি হিসেবের বাটখারা।
” ঘুমাও সোনা… স্বপ্নে আসুক আলাদিন”

মন্তব্য করুন