মেঘ, তুই আমার কথা শোন–
তোকে আমি গড়িয়ে দেব
সাতলহরি রুপোর বিছে মল
ছম ছম শব্দে বৃষ্টি ঝরাবি!
আরও যদি চাস, নোলক পাবি,
জলের রঙে কাব্য আঁকা নীলাম্বরী শাড়ী পাবি–
তোকে লাগবে যেন মেঘরাজ্যের আকাশপরী,
নাহয় দেব কানেও ঝুমকো দুল!
তুই শুধু উড়ে যাবি দূরদেশে সেই গাঁয়–
নিরিবিলি বয়ে যাওয়া দক্ষিনগাঙের বায়
গাঙ পেরিয়ে দেখবি সবুজ গাঁও
সেই গাঁয়ে এক বাঁশিওয়ালা–
আপন মনে বাজায় বাঁশি- তোলে কোমল সুর
দেখলেই তুই চিনবি তারে–
একমাথা তার ভ্রমর কালো চুল!
গায়ের বরণ তোরই মতন শ্যামল কাজল কায়া
দুচোখে তার অথৈ পাথার সবুজ বনের মায়া
মোটেও সে নয় কথায় সরব,
লাজুক চোখে দুষ্টুমি সব
ছিপছিপে তার গড়ন দেখে চিনতে যেন
করিস না তুই ভুল!
পেলে তারে বলিস নিরিবিলি
ত্রস্ত স্বভাব সামলে সযতনে–
চৈত্র সংক্রান্তির মেলা শেষে প্রায়,
নতুন বছর আসছে নতুন গানে
ফিরবে কী সে পুরনো দিন শেষে
উজান-নদীর মায়ায় ঘেরা গাঁয়?
বিরহী পথ ঝরা ফুলে সাজে
উদাসী মন আকুল প্রাণে বাজে
আমের ডালে নতুন ফলের রেশ,
চড়ুই, দোয়েল, ফিঙের আলাপনে
দাওয়ায় তাদের নিবিড় পরিবেশ!
এই বৈশাখও এমনি যাবে দূরে-
বকুল ঝরে কান্না পাওয়া সুরে
দূরে বাঁশীর সুর মিলিয়ে যায়
মেঘ তোর খেলা ফেলে —
যা ছুটে যা করিসনে আর ভুল!