নন্দিনীর কাছে চিঠি/মোতালেব ফারুকী

নন্দিনী,
তোমার স্বপ্নীলাক্ষির উদভ্রান্ত চাহনিতে
আমি প্রেমের বানে বিদ্ধ হয়েছি–
অযুত দিন অযুত রাত্রি,
গাঙচিল ভ্রুর ভোমর কালোয় বিমুগ্ধ হয়ে
হৃদয়ে এঁকেছি সুবর্ণ সদন।
তোমার কামরাঙ্গা ঠোঁটে প্রবাহিত নহরে
অবগাহনের বাসনা ছিল আজন্ম,
রক্তাপ্লুত বক্রগ্রীবায় কিংবা অনাঘ্রাতা
শৈল্পিক সৌন্দর্যে কামুক তাড়না মেটাতে
উদ্ধত হয়েছি বার বার,
নিতম্বের নিভাঁজে খুঁজেছি দামী গুপ্তধন।
তোমার এলোকেশে আকাশ দেখার
দুর্লভ মুহূর্ত শিকারী শ্যেনদৃষ্টিতে বিদ্ধ হয়েছে
কত দিন!
তোমার সুডৌল পদযুগলের অবিরত
ধীর পদক্ষেপ মন্ত্রমুগ্ধের মতো
তাকিয়ে দেখেছি সহস্র দিন।
দেহে জড়ানো সিক্ত নীলাম্বরীতে
তোমাকে চমৎকার গুহাচিত্ররূপিণী বলে
ভেবেছি কত!
তোমাকে দেখে দেখে সুচরিত জীবন
বিসর্জনের প্রতিজ্ঞা মনে জেগেছে
কখনো।
নন্দিনী,কোথায় কোন অচিনপুরীতে
তোমার সুখের বসবাস?
কোন কৌলিণ্যের স্রোতে ভাসে
তোমার শরীর?
যেখানে আমি আজ শুধুই অবাঞ্ছিত,অনাহূত!
আমিতো নিলয় খুঁজে নিয়েছি
বেদনার নীল পাহাড়ে,
মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে আকাশ পানে তাকিয়ে
অনুভবে তোমাকেই দেখি।
নন্দিনী, মাঙ্গলিক কামনায় যদিও চাহিনা,
তবুও বলি-
বৈধব্যের স্বেতশুভ্র বসনেও যদি কোন দিন
সম্মুখে এসে দাড়াও, দুহাত বাড়িয়ে
কাছে টেনে নেব,তুমি আমার
একান্তই আমার,আশ্বাসের
এ বাণীই শোনাবো।

রচনাকালঃ১৯৮৭।
(আমার নিজ জীবনের কোন কাহিনী না,আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বন্ধুর ব্যর্থ প্রেমের কাহিনী কবিতায় রূপ দেয়ার চেষ্টা মাত্র।)

মন্তব্য করুন