কুয়াশা কুয়াশা ঘোর/নাসির আহমেদ কাবুল



অতঃপর মুখোমুখি হলাম দুজনে
পনেরো বা তারও কিছু বেশি সময় পর।
বিহ্বলতা কাটিয়ে পুরোনো কষ্টগুলো আড়াল করে বললাম–
ভালো আছ তো?
জানি সে ভালো নেই, নন্দিতারা ভালো থাকে না কোনোকালে!

আমার কথা দূর পাহাড়ে প্রতিধ্বনিত হলো,
সাতসমুদ্রের জোয়ারের ঢেউ তুলে
আছড়ে পড়ল যেন বিশুষ্ক তটে!

চোখে তার বিস্ময়ের ঘোর—স্থির
যেন পাথরে বানানো নিপুণ কারিগরের হাতে।
বলল, ‘তোমার দেখি সবগুলো চুলই পেকে গেছে!
কী করছ এখন তুমি? চাকরিটা আছে তো?
নাকি বেকার- বাউণ্ডুলে হয়ে ঘুরে বেড়াও সারাদিন!’

হেসে উঠলাম অকস্মাৎ;
উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়ল দুই চোখে
সেই পুরোনো নিয়মে।
নিতম্ব থেকে শুরু–দৃষ্টি বুকের উপর হয়ে
স্থির দুই ঠোঁটে; বললাম হেসে–
‘এখন বুঝি টকটকে লাল লিপিস্টিক দাও না ঠোঁটে?’

মরা মাছের মতো ফ্যাকাসে চোখ তার!
বিবর্ণ আঁচলে দুঃখের স্বরলিপি!
বলল, ‘সত্যিই তুমি পাগল! এখনও রয়ে গেলে
আগের নিয়মে!’

হঠাৎ মেঘে মেঘে গর্জন, বিদ্যুতের স্ফূলিঙ্গ বাতাসে;
মেঘ-কালো চুলে হঠাৎ ঝড়ের তাণ্ডব!
ঠোঁট দুটি ফুলে কেঁপে উঠল অভিমানে পুরোনো অনুরাগে।
বলল, ‘যাই তাহলে–বেলা পড়ে এলো বুঝি!
শরীরের খুব যত্ন নিয়ো কিন্তু।
যেন আরো একবার দেখা হয়
আবার কোনোকালে!’
তখন তার আঁচল আমার হাতে, চোখের ওপর চোখ
মনের দরজা হাটকরে বন্ধ হতে চাইল না কিছুতে।

কবি আঞ্জুমান আরা খান

সকল পোস্ট : আঞ্জুমান আরা খান