ইচ্ছে জাগে প্রতিদিন/ শীলা প্রামাণিক

ইচ্ছে আমার অনেক জাগে
পৃথিবীটাই স্বর্গ হবে
মানুষে মানুষে প্রীতির বাঁধন রবে।
ঠিক যেমন আকাশ বাতাস চন্দ্র তারা
সূর্যের আলো সবার জন্য সমান ভাগে,
তেমন করেই জাগতিক সুখ-সম্পদ
সবার জন্য সমান হবে।
ইচ্ছে আমার অনেক জাগে,
কারো জন্য অট্টালিকা
কারো জন্য ছাদহীন ওই খোলা আকাশ
ভেঙে দিই এই নিয়ম-নিকাশ।
ইচ্ছে আমার অনেক জাগে
নিজের মনেই নিজের সাথে
নকশা আঁকি, আঁকি কত দ্বন্দ্ব
যদি উঁচু-নিচু ভেদাভেদ ভুলে
উড়িয়ে দিতে পারতাম সকল কালো-মন্দ।
ঘুচে যেত আকাশ-পাতাল ভেদ
এক নিমেষে নিভে যেত তপ্ত মনের খেদ।
যদি হঠাৎ থেমে যেত বৈশ্বিক হানাহানি
থেমে যেত রক্ত নদীর স্রোত,
সব মানুষের মুখে থাকত হাসির কলতান
বিভেদ ভুলে গাইত সবাই ভালোবাসার গান।
আমার অনেক ইচ্ছে ছিল,
ইচ্ছেগুলোর পাতা খুঁড়ে
যখন আমি ভীষণ ক্লান্ত,
আবারও ইচ্ছে জাগে
পৃথিবীটা সবার জন্য সমান হবে।
রমজানের এই রোজার শেষে
ইদের খুশি সবার ঘরে সমান হবে।
ইচ্ছে আমার অনেক জাগে
বুক ফুলিয়ে বীরের মতো লড়ি
সমাজটারে ভেঙে আবার নতুন করে গড়ি।
ইচ্ছে করে মুখোশগুলো টেনে খুলি মুখোশধারীর
ইচ্ছে করে অধিকারের পাল্লাখানি সমান করি
পুরুষ এবং নারীর।
ইচ্ছে আমার অনেক জাগে
বন্ধ করি ফাঁকা বুলি ভণ্ড নেতার,
সিংহাসনটা উলটে ফেলি,
কালো হাতটা মুছড়ে ধরি
ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ হোতার।
ইচ্ছে জাগে মেরুদণ্ড সোজা করে
দাঁড়াই একবার সত্যের মুখোমুখি,
দুর্দান্ত সাহসের মুখোমুখি, অন্যায়ের মুখোমুখি,
হাতে তুলে নিই কলম
লিখে যাই বিকট শব্দের প্রতিধ্বনি তুলে
এক অনিবার্য কবিতা।
যত লিখে যাই, কবিতা হয় না
হয়ে যায় বিষাদ।
এমন যদি হয় কোনোদিন
সব অবিচার ভুলে যাবে
মানুষগুলোর মনের জমিন।
ইচ্ছেগুলো আমার সেদিন
পাখির মতো উড়াল দেবে
ফুলের মতো হবে রঙিন।
ইচ্ছে জাগে নিয়তি সব বদলে দিই
কষ্টে পোড়া মানুষগুলোর
নিজের হাতে ভাগ্য লিপি লিখে দিই
ভাগ্য যাদের ধূসর ধুলোর।
ইচ্ছে আমার অনেক জাগে, ইচ্ছে জাগে প্রতিদিন
অন্যায় সব উড়ে গিয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠা পাবে,
পৃথিবীটা সুন্দর হবে
ঘিরে থাকবে ভালোবাসা মানুষে মানুষে
দেখে যাব দুচোখের ভাঁজে, পৃথিবীটা স্বর্গ হবে
অবশেষে।