বর্ষার চিঠি
প্রিপারেশন হয়নি কিচ্ছু। বসছি না পার্ট টুতে
মাথার মধ্যে হাজারখানেক লাইন ঘুরছে, লাইন
এক্ষুনি খুব ইচ্ছে করছে তোমার সঙ্গে শুতে
চুল কেটে ফেলেছ? নাকি লম্বা বিনুনিটাই
এপাশ ওপাশ সময় জানায় পেন্ডুলামের মতো
দেখতে পাচ্ছি স্কুলের পথে রেলওয়ে ক্রসিং-এ
ব্যাগ ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছ শান্ত, অবনত
এখানে ঝড় হয়ে গেল কাল। জানলার কাচ ভেঙে
ছড়িয়ে পড়েছিল সবার নোংরা বিছানায়
তুলতে গিয়ে হাত কেটেছে। আমার না, অঞ্জনের
একেকজনের রক্ত আসে একেক ঝাপটায়
সবাই বলছে আজও নাকি দেদার হাঙ্গামা
বাসে আগুন, টিয়ার গ্যাস, দোকান ভাঙচুর
কিন্তু আমি কোনও আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি না
বৃষ্টি এসে টিনের ছাদে বাজাচ্ছে সন্তুর…
ঝালা চলছে। ঘোড়া যেমন সমুদ্রে দৌড়য়
ভেতর-ভেতর পাগল, কিন্তু সংলাপে পোশাকি…
তুমিই উড়ান দিও, আমার ওড়ার গল্প শেষ
পালক বেচি, আমিও এখন এই শহরের পাখি
স্বপ্ন
বিকেলবেলা বাড়ি থাকাও পাপ
বাইরে হাওয়া, ঘরে নতুন টিউব
মাথায় বাজে একলা ডায়াল টোন
গ্যাসের দাম বাড়ছে, প্রেম নেই,
দুটো প্রাচীন টিউশানি হারালাম
তবু আমায় চিনছে এতজন…
একেকদিন বাড়ি ফেরার পথে
একেকদিন, সত্যি মনে হয়
আমি বোধহয়… আমি বোধহয় ক্লোন !
এখন আমার স্বপ্ন বলতে শুধু
পাড়ার ছোট ছেলেমেয়ের হাতে
নানা রঙের মুখোশ বিতরণ
অপেক্ষা
ভ্রু পল্লবে ডাক দিয়েছ, বেশ।
আমার কিন্তু পুরনো অভ্যেস
মিনিট দশেক দেরীতে পৌঁছনো
তোমার ঘড়ি একটু জোরেই ছোটে
আস্তে করে কামড় দিচ্ছ ঠোঁটে
ঠোঁটের নীচে থমকে আছে ব্রণ
কুড়ি মিনিট? বড্ড বাড়াবাড়ি!
দৌড়ে ধরছ ফিরতিপথের গাড়ি
ফিরতিপথেই ভুল হল সময়—
আমারও সব বন্ধুরা গোলমেলে
বুঝিয়েদেবে তোমায় কাছে পেলে
কেমন করে গল্প শুরু হয়!
খোলাচুলের সংজ্ঞা দিতে দিতে
সন্ধে নেমে আসবে বস্তিতে
ভাবছ তোমার অপেক্ষা সার্থক?
জানবেও না আমি ততক্ষনে
অন্ধকার চন্দনের বনে
ঘুরে মরছি, কলকাতার লোক…