রিনির ডায়েরিঃ বর্ষা-মেঘ ও প্রকৃতি

মাহমুদা রিনি

মেঘ বলেছিল ‘আমি আসবো শ্রাবনের প্রথম লগ্নে-
তুমি খুব করে সেজে থেকো’।
প্রকৃতি তাই আপন মনে সুসজ্জিত।
চারিদিকে সাজানো অপরূপ সবুজের সমারোহ।
নিবিড় ঘন বরিষণে মেঘের আলিঙ্গন, মুহুর্মুহু শিহরিত বৃক্ষরাজির প্রাণ।
মলিনতা ধুয়ে পুষ্প পল্লব নবধারায় স্নানরতা।
কোমল কুসুম সোহাগে মরমে
পডে়ছে ঢলে আবেগে শরমে,
কদম্ব ডাল আনত ফুলভারে—-
কাজল কিশোর মেঘ চঞ্চল
গগনে গরজে রে!
গৃহত্যাগী বাউন্ডুলে মেঘ ঘুরে বেড়ায় দেশে দেশে—- কোথাও তার মন বসে না।
বিরহী প্রকৃতির চিঠি বিলি করে ডাকপিয়নের মত। কখনো মন খারাপ হলে দু’ফোটা অশ্রু ঝরায়,
আবার সে সময় মত ফিরে আসে প্রকৃতির কাছেই। বর্ষা তার আবাল্য প্রেয়সী–
যত দূরেই যাক শ্রাবণ ঘন ঘোর রূপে ঘুরে ফিরে আসে রূপসী বর্ষার টানে।
মন ভুলায় নানান ছলনায়—
শোনায় মেঘের দেশের সাজানো কাব্য কথা,
বসায় মেঘমল্লারে রাগ রাগিণীর আসর,
সাজে তান্ডব রণসাজে উদ্যম নটরাজ,
তোলে নূপর নিক্কণে রিমঝিম বৃষ্টির ছন্দ,
বজ্র বিদ্যুতের আলোর ঝলকানিতে সাজায় প্রকৃতি।

প্রকৃতির সাথে মেঘের চলে মান অভিমান, লুকোচুরি খেলা।
গাল ফুলনো অভিমানী মেঘ কখনো থমথমে আঁধারে ঢাকা, আবার হঠাৎই কোথায় নিরুদ্দেশ!
নীলাকাশে সাদা মেঘের ভেলায় করে এপার ওপার, কখনো সাতরং নিয়ে খেলে রংধনু খেলা।
এই রোদ এই বৃষ্টির খেলায় সারাক্ষণই প্রকৃতিকে সাজিয়ে রাখে।
যাযাবর মেঘ যেন পাগল প্রেমিক,
ঘরছাড়া বিবাগী বাউল,
আপন ভোলা রুদ্র ভয়ংকর,
আবীরে রাঙা শ্যামের মূরতি,
বহুরূপী মেঘ আর বিরহিনী প্রকৃতির
আপন মনে খেলা চলে নিত্য অবিরাম—–

সাহিত্য-ডেস্ক/আজ-আগামী/২০২১/০৭/২৪/নী/জ/@কপিরাইট_সংরক্ষিত

কবি নীলকন্ঠ জয়

সকল পোস্ট : নীলকন্ঠ জয়