কৃতজ্ঞতা বড় গুণ।। সুব্রত দে

বাংলা ব্যাকরণে এক কথায় প্রকাশ প্রায়ই পড়তে হত। তারমধ্যে দুটি শব্দ ‘কৃতজ্ঞ’ ও ‘কৃতঘ্ন’। কৃতঘ্ন শব্দ নিয়ে কোনো কিছু বলার আগ্রহ নেই কারণ এটির প্রচার-প্রসার সর্বজন বিদিত। কিন্তু জীবন চলার পথে কৃতজ্ঞতা বিষয়টি মানবীয় গুণাবলীর মধ্যে অন্যতম মহৎ গুন। সচরাচর কোন কাজ করলে বুঝে না বুঝে থ্যাঙ্কিউ বলার এক অবাধ প্রচলন দেখা যায়। কিন্তু কৃতজ্ঞতা বোধের সংজ্ঞায়নে ইংরেজি থ্যাঙ্কিউ শব্দটি যথার্থ নয়।

একটি নাটক যখন মঞ্চস্থ হয় দর্শকের তুমুল সাড়া পড়ে তখন নাটকের রচয়িতা, নির্দেশক ও অভিনেতা-অভিনেত্রী সকলে খুব গর্বিত হয়। দর্শক অভিনেতা-অভিনেত্রীদের গুনগানই বেশী করে। কিন্তু নেপথ্যে মঞ্চ প্রস্তুতির জন্য গা ঘামানো দিনমজুর যার শক্তহাতের উপর মঞ্চ দাঁড়িয়ে ছিলো এতটা গভীর বোধ থেকে তাদের স্মরণ কেউ-ই করে না।

বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ শ্রমিকের মেহনতে তিল তিল করে গড়ে তোলা কিন্তু ঐ শ্রমিকের কষ্ট কখনো কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ হয় না।

বাজারের নকশী কাঁথা সেলাই সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে এবং ব্যবহারকারী সেই সৌন্দর্যে মাতোয়ারা হয় কিন্তু প্রতিটি সেলাইয়ে ফোঁড়ে ফোঁড়ে লুকিয়ে আছে যে কারিগরের দুঃখ কষ্টের জীবনকথা সেই বোধকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে না।

আসলে জীবনে চলার প্রতিটি সিঁড়িতে মানুষ কারো না কারো প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ সহযোগিতা ভিন্ন কেউ উঠতে পারে না। তবে সবাই ভুলে যায়, অনেক উঁচুতে উঠলে নিচে পড়ে থাকা মানুষকে ক্ষুদ্র জ্ঞানে ভাবে। কিন্তু ক্ষুদ্র ঐ মহত্বের আলো, সেই বোধটা যেন বিস্মরণ না হয়। এটি মানব জীবনের অমূল্য গুন।

কবি নীলকন্ঠ জয়

সকল পোস্ট : নীলকন্ঠ জয়