বাকরুদ্ধ

আবু রায়হান

নির্ঘুম রাত্রিতে ক্লান্ত দেহে-
যান্ত্রিক জীবনের কর্ম ব্যস্ততার পাঠ চুকিয়ে
প্রশান্তির মায়াময় কোমল চাদরে গা এলিয়ে
অগ্নিদগ্ধ গ্রীষ্মের ঝমঝম বৃষ্টির পরবর্তী ঝি ঝি
ডাকা ঘুটঘুটে অন্ধকারে বাতায়নের শীতল বাতাসের মায়াবী পরশে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু আমার ঘুম আসে না!

প্রভাতের হিমেল হাওয়ায় গা মেলে হাটতে গিয়ে
ফুটপথের অসহায় ছিন্নমূল মানুষের হাহাকার-
ডাস্টবিনের ময়লা খাবার নিয়ে মানুষ পশুতে একাকার, পিচঢালা রাজপথে পঁচাজল ঢেউ তোলে, জনগণের ভালোমন্দ দেখার জন্য আছেন মন্ত্রী,আমলা, নেতা, প্রশাসন, পুলিশ, আর্মি,গোয়েন্দা,জনবান্ধবজননেতা,
হাজারগোন্ডা মানবতাবাদী সংগঠন ;
আমার মাথাব্যথার প্রশ্নই আসে না!

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে-
সহস্র প্রতিবন্ধকতার মাঝে মাস্টার্স পড়ুয়া
ছাত্রাবাসের বৈধ ছাত্রটিকে যখন তারই আশ্রিত
ক্যাডার ছোটভাই টি কলার চেপে শাশিয়ে বলে
রাত্রের মধ্যেই ক্যাম্পাস ত্যাগ করবি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রভোস্ট সহ
শরীরে দ্বিগুণ শক্তি ও সাহস থাকা সত্বেও
তার কিছুই করার থাকে না!

গাঁ-গ্রামে চলতে গিয়ে-
অপরিপক্ব নাবালকের নেতাগিরিতে
অতিষ্ঠ তৃণমূল মানুষের হা-হুতাশ দেখে,
বাঁধভাঙা অনিয়মের বেশাতি মাথায় নিয়ে
যারা সাধারণ মানুষের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছে তাদের ঘৃণিত রূঢ় আচরণ দেখে
আমার হৃদপিন্ড প্রকম্পিত হয়।
কিন্তু আমার কিছুই করার থাকে না!

চোখের সামনে সমাজের অধিকার বঞ্চিত
অসহায় মানুষের ভাগ্য নিয়ে শোষিত শ্রেণির
শকুনের ন্যায় টানাটানি , হায়েনার দলের হিস্র থাবার তীক্ষ্ণ নখরে রক্তাক্ত মানবতা যখন ডুকরে ডুকরে কাঁদে-
নিষ্পলক নিরুপায় সাদামনের মানুষ গুলোর মত
আমিও চিৎকার দিয়ে বলতে পারি না-
এটা অন্যায়! এটা অন্যায়!
বলতে পারেন?
আমরা কবে মুক্ত বাতাসে সজীব নিঃশ্বাসে
বলতে পারবো-
আমরা মুক্ত! আমরা স্বাধীন!
আমরা মুক্ত পৃথিবীর প্রাণবন্ত নবীন!

সাহিত্য-ডেস্ক/আজ-আগামী/২০২১/০৭/১৩/নী/জ

কবি নীলকন্ঠ জয়

সকল পোস্ট : নীলকন্ঠ জয়

মন্তব্য করুন