সেই সে মহান/শীলা প্রামাণিক

শুধু একাত্তর নয়
বহু বছরের ক্লান্তিহীন দুর্বার পথ পরিক্রমায়
সে এক অসামান্য আত্মবিশ্বাস।
তিলে তিলে গড়ে তোলা লড়াই-সংগ্রাম।
জোয়ার এসেছিল সেদিন, ভালোবাসার জোয়ার,
ভেসে যাবার জোয়ার।
জোয়ার এসেছিল আত্মনিবেদনের জোয়ার।
পাখির ডাকে ঘুম ভাঙ্গে যাঁর
তাঁর কন্ঠে এক সমুদ্র ভালোবাসার জোয়ার।
মুহূর্তেই সারা বাংলাকে করে এক কাতারে একাকার।
সে এক বজ্রকন্ঠ
ফসলের মাঠ হতে ভেসে আসা বজ্রকন্ঠ
ধানের শীষ হতে ভেসে আসা বজ্রকণ্ঠ।
লাঙ্গলের ফলায় বজ্রকণ্ঠ,
জেলেদের জালের ছিদ্রময় বজ্রকন্ঠ
সর্বস্তরের জনতার হৃদয়ে বজ্রকন্ঠ,
নদীর জল তরঙ্গে মুহুর্মুহু ধ্বনিত বজ্রকন্ঠ।
সেই বজ্রকণ্ঠ হতে বিচ্ছুরিত হয় জ্যোতির্ময় আভা
প্রকাণ্ড শক্তিতে বলিয়ান হয় জনতার মঞ্চ সভা।
ভেসে আসে কয়েক মিনিটের কবিতা
ভেসে আসে বাঙালির মুক্তির বারতা।
সেই অবিনাশী বারতা ছিনিয়ে আনল জন উল্লাস।
স্বাধীন মাতৃভূমির মৃত্তিকা ছুঁয়ে জাতি নিলো প্রথম পরম শ্বাস।
আজও সাক্ষী বাংলার পথপ্রান্তে জেগে থাকা সবুজ ঘাস
সে এক ইতিহাস।
সেই অসামান্য ইতিহাসের নাম
পিতা শেখ মুজিবুর রহমান।
জাতির বিবেকের সাথে মিশে আছে সে নাম,
সেই সে ইতিহাস, সেই অসামান্য দান।
পঁচাত্তরের প্রভাতে ঘাতকের নির্মমতায় কেড়ে নিলো সেই প্রাণ,
পারেনি কেড়ে নিতে হৃদয়ে খচিত নাম।
জল তরঙ্গের ভাঁজে ভাঁজে লিখিত সেই নাম,
বাতাসের শব্দ তরঙ্গে ঘোষিত নাম, সেই সে মহান
পিতা শেখ মুজিবুর রহমান।